গণশক্তি ডেস্কঃ
ধর্মনিরপেক্ষতাসহ রাষ্ট্র পরিচালনার তিন মূলনীতি বাদ ও গণতন্ত্র বহাল রেখে চার মূলনীতির সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। সংবিধানের প্রযোজ্য সব ক্ষেত্রে প্রজাতন্ত্রের পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ এবং ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’-এর পরিবর্তে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী পদের একচ্ছত্র ক্ষমতা হ্রাস ও অন্তবর্তী সরকার কাঠামোর সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবসহ সাত দফা সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। স্বাধীনতা যুদ্ধের আদর্শ ও ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনস্বরূপ সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্রের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সংবিধানের প্রযোজ্য সব ক্ষেত্রে ‘প্রজাতন্ত্র’ এবং ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ এবং ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ শব্দগুলো ব্যবহৃত হবে।
পাশাপাশি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার প্রস্তাব করা হয়েছে। দুই কক্ষের মেয়াদ হবে চার বছর। নিম্নকক্ষ হবে সংখ্যগরিষ্ঠ ভোটে সরাসরি নির্বাচিত সদস্যদের সমন্বয়ে। ৪০০ আসন নিয়ে হবে নিম্নকক্ষ। ৩০০ জন সদস্য একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকা থেকে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন। আরো ১০০ জন নারী সদস্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন।
বাংলাভিশনের গুগল নিউজ ফলো করতে ক্লিক করুন
রাজনৈতিক দলগুলো নিম্নকক্ষের মোট আসনের ন্যূনতম ১০% আসনে তরুণ-তরুণীদের মধ্য থেকে প্রার্থী মনোনীত করবে। সংসদীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ন্যূনতম বয়স কমিয়ে ২১ বছর হবে। ২ জন ডেপুটি স্পিকার থাকবেন, যাদের মধ্যে একজন বিরোধী দল থেকে মনোনীত হবেন। একজন সংসদ সদস্য এক সাথে প্রধানমন্ত্রী, সংসদনেতা এবং রাজনৈতিক দলের প্রধান যেকোনো একটির বেশি পদে অধিষ্ঠিত হবেন না। রাষ্ট্রপতির মেয়াদ হবে ৪ (চার বছর)। রাষ্ট্রপতি সর্বোচ্চ দুই বারের বেশি অধিষ্ঠিত থাকবেন না।
একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সর্বোচ্চ দুই বার দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের প্রধান ও সংসদ নেতা হিসেবে অধিষ্ঠিত থাকতে পারবেন না।
এদিকে জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের সুপারিশ করেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। বিকেলে সংসদ ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার।
আইসিটি আইনে সাজাপ্রাপ্তদের কোনো দলের সদস্য না করা এবং যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গুম-খুনের সাথে জড়িত তাদেরকে নির্বাচনের বাইরে রাখার সুপারিশের কথাও জানিয়েছেন কমিশন প্রধান।
নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি দায়বদ্ধ করার কথা বলেছে কমিশন।