গণশক্তি ডেস্কঃ
সংস্কার না করে নির্বাচন দিলে আবারো জবরদখলের ঘটনা ঘটতে পারে”, বলেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক।
সংস্কার না করে নির্বাচনে যাওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলম।
শনিবার দুপুরে সিলেটে ডিসির সম্মেলন কক্ষে আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
‘শুধু নির্বাচনের জন্য দুই হাজার মানুষ জীবন দেয়নি, অর্ধলাখ মানুষ রক্ত দেয়নি’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সিস্টেমগুলোর যৌক্তিক সংস্কার শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনে যাওয়া উচিত।”
বর্তমান সংবিধান গত ১৬ বছর-এমনকি ৫৩ বছর ধরে বাংলাদেশকে পাঁচ বছরের জন্য জনতার সরকার উপহার দিতে পারেনি দাবি করে সারজিস বলেন, “পাঁচ বছর পর পর অনেক বড়-বড় ইশতেহার দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন করে, ক্ষমতায় আসে। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তারা ভুলে যায়, তারা কী ইশতেহার দিয়েছিল। তারা ভুলে যায়, তারা জনতার সরকার।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে ছাত্র আন্দোলনের এ নেতা বলেন, “আমরা বলছি না, রাষ্ট্রের সবকিছু সংস্কার করে তারপর নির্বাচন দিতে। আমরা এটাও বলছি না, আগামী পাঁচ-ছয় বছর সংস্কার করেন। কিন্তু সংস্কারের জন্য ন্যূনতম একটা যৌক্তিক সময় লাগবে। কোনো বিবেকবান মানুষ তার জায়গা থেকে চিন্তা করতে পারে না যে, এক বছরের মধ্যেই সবকিছু সংস্কার হয়ে যাবে।
“নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার করে অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনে যাওয়া উচিত। তা না হলে আমরা আগের জায়গাতেই থেকে যাব,” বলেন সারজিস আলম।
নির্বাচন কমিশন একা সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারে না মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, “এর পাশাপাশি অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান জড়িত। এর মধ্যে অন্যতম হল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে একটি সিস্টেমের মধ্যে আনা।
“তা না করে নির্বাচন দিলে আবারো জবরদখলের ঘটনা ঘটতে পারে। ক্ষমতার অপব্যবহার হতে পারে।”
তিনি বলেন, “এই নির্বাচন ঘিরে যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয়, সেটার সমাধানের জন্য একটি বিচারিক প্রক্রিয়া দরকার। তাই বিচারব্যবস্থারও সংস্কার প্রয়োজন।”
অভ্যুত্থান ‘মুষ্টিমেয় লোক দিয়ে’ হয়নি দাবি করে সারজিস আলম বলেন, “যে ফ্যাসিস্ট সরকারকে ১৬ বছরে বাংলাদেশের বড় বড় রাজনৈতিক সংগঠন নাড়াতে পারেনি, সেই শেখ হাসিনা কিছু লোকের জন্য এই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি। পুরো বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমেছিল বলেই অভ্যুত্থান ঘটে ছিল।”
সারদেশে ১৬শ জনের বেশি শহীদের পরিবারের তালিকা পাওয়া গেছে দাবি করে তিনি বলেন, “যাচাই-বাছাই করে পরিবারের সদস্যদের হাতে আর্থিক অনুদানের চেক দেওয়া হচ্ছে।”
সিলেট বিভাগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ১৮ জনের পরিবারের সদস্যের হাতে ৫ লাখ টাকা করে অনুদানের চেক তুলে দেওয়া হয় বলে জানান আন্দোলনের এ কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক।
সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেটের সমন্বয়কদের মধ্য আসাদুল্লাহ আল গালিব, হাফিজুল ইসলাম, ফয়সাল হোসাইন ও শিশির।